জেলখানার চিঠি – সূর্যাশীষ ঘোষ
জানি না, কিছু জানি না
কেমন আছো তুমি?
তবে এই বিছানা, দেওয়াল
জানে ভালো নেই আমি।
নেই কোনো আনুষঙ্গিক
দুবেলা শুধু ভাত আর ডাল;
প্রায়শই মনে হয় এভাবেই কাটবে
আমার বার্ধক্য কাল।
দুপুরে আধ ঘণ্টা, জেলের বাইরে;
বেরোনোর ছিল নীতি,
ওই সময়টাই বাইরে বেরোয়;
এটাই হয়তো ছিল আমার নিয়তি।।
দেয় না দাঁড়াতে ব্যালকনিতে।
যাওয়া বারণ বাইরের রাস্তাতে।।
তাই শুধু শুয়ে বসে দিন যায়,
এই লোহার তৈরি শক্ত খাঁচায়;
ঠিক রাত আটটায়,
শোবার জন্য বাজে ঘণ্টা।
কিন্তু কিছুতেই ঘুমাতে যে চায় না।
আমার অবুঝ মনটা।।
ব্রাশের জন্য গেটের লক,
খুলে দেয় সকাল ছটায়;
আমাদের মধ্যে কেউ জানে না
খাবার দেবে ঠিক কটায়?
জেলের মধ্যে আমরা,
কয়েদি আছি হাজার হাজার;
কিন্তু কারোরই,
নেই কোনো ইচ্ছে বাঁচার।
কারোর মা দেখতে আসে,
কারোর আবার বউ;
আমার বাড়ির সব অভিমানী,
তাই দেখতে আসার নেই কেউ ।।
কিছু দিন অন্তর জেলে,
নতুন নতুন বন্ধু আসে;
তাদের আশার কারণ জানতে চাইলে,
বলে “কী দোষ করেছি ভালোবেসে”?
তারা রড বাঁকিয়ে পালাতে যায়,
তাদের নেই কোনো ভয়াবহতা।
পুলিশ এসে জেরা করলে,
আমার বাড়ে দুর্বলতা।।
জেলের মধ্যে আমরা সবাই,
এক একটা পরিবার।
একজন কেউ দুঃখ পেলে,
অন্য কেউ পারে না তা মেনে নেবার।
হয়তো একদিন ছাড়া পাবো আমি;
বেরোবে কোর্টের রায়।
সেদিন আমি বন্ধুদের,
করবো টাটা বাই বাই।।